কয়েকটা ছোট কবিতা
২০১২ বা তার আগে লেখা কিছু ছোট কবিতা এবং লিমেরিকস
কালক্ষেপন
মধ্যরাতে ইচ্ছে হলো, "সবটা লিখে করবো শেষ";
ঘাড় বেঁকিয়ে বালিশ কোলে বসেও গেলাম লিখতে বেশ !
শেষ করে সব টিভি সিরিজ, পূর্ণ তৃপ্ত মন
অধ্যাবসায় করবো শুরু; প্রতিজ্ঞা ভীষণ !
শক্ত হাতে কলম ধরে, করবো শুরু লেখা
সাদা পাতার সামনে এসেই ভর্তি মাথা ফাঁকা !
মনোনিবেশ চূড়ান্ত তাই তীক্ষ্ণ নয়ন গুলি,
লিখতে লিখতে 5 মিনিটেই তিনশোটা হাই তুলি।
প্রতিশ্রুতির অঙ্গীকারে চক্ষু হলো লাল,
তাই
আজ গুটিয়ে শুয়েই পড়ি, লিখবো নাহয় কাল !
আলোসাদা কালোছায়া
একলা চলার সন্ধ্যেবেলা, অনেক দূরের আলো
হঠাৎ জ্বলে অন্ধকারে মন করে দেয় ভালো ।
আধো আলোয় মিষ্টি সবুজ নাম না জানা গাছে,
কার কি জানি হারিয়ে যাওয়া গল্প লেখা আছে ।
স্বপ্ন দেখা, স্বপ্ন ভাঙা, দুঃখ-হাসি-আশা,
একটু রেগে মালিন্য-মন একটু ভালোবাসা ।
অর্চি হয়ে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ার আগে,
নীলচে রঙা স্বপ্নগুলো রাত্রি হয়েই জাগে ।
অনেক হেঁটেও শূন্য হাতে ফিরতে হওয়ার রাগে,
ইচ্ছেগুলো দিনের শেষে বড্ড প্রিয় লাগে ।
বুক ভরে তাই অনিচ্ছাতেও আপন করে নিস,
বিষন্নতায় জ্বলতে থাকা দিন ফুরোনোর বিষ।
একটি বর্ষণমুখর দুপুর
মেঘলা দিন, খুব রঙিন, শুধুই সাদা কালো,
আজ দুপুর, স্বপ্নাতুর, বৃষ্টি ছলো ছলো।
প্রথম ঝড়, একটু পর, রৌদ্র গেলো নিয়ে,
সূর্য তার, অঙ্গীকার, ব্যর্থ করে দিয়ে।
এক রাশি, খুব হাসি, বৃষ্টি বাসি ভালো !
একটি বর্ষণমুখর রাত
বৃষ্টিভেজা অন্ধকার হঠাৎ কালোর ধুম
শূন্য আলো, সঙ্গে তার মৌনতা নিঝ্ঝুম !
মেঘের হলো হাতাহাতি, অঝোর ধারায় শেষে
দ্বন্দ্ব ভোলে রাতারাতি গভীর ভালোবেসে।
বৃষ্টি-জলের উষ্ণতা, আর ঘনিয়ে এলো ঘুম !
রামধনু
সাজানোই ছিল, তাও খুঁজে পেলাম না !
একটু একটু করে পেছোতে পেছোতে
প্রচন্ড সামনে এসে পড়লাম।
এতটাই সামনে যে আর পেছোনোর জায়গাই নেই।
অনেক হাতড়েও চোখদুটো একসাথে পেলাম না।
তাই দেখেও দেখা হলো না।
বোধ হয় অবাক হলাম। হলাম কি?
অবাক হয়ে ভাবলেও আবার অবাক হতে হয়।
তার থেকে মেনে নিলেই বোধ হয় সুবিধে।
কখন শেষ হলো ধরতে পারলাম না,
তাহলে নিশ্চই প্রথম থেকেই শুরু হয়েছিল।
অথবা শেষ হলো শুরু হবার আগেই !
কিন্তু খুঁজতে হলে অনেক দূর যেতে হবে।
তাই হারিয়ে যাবার মতো সাহসটাও থাকা দরকার।
অথবা ভুলতে পারা।
সবকিছুর শেষে হারতে হয়।
অনেক ভেবেও শেষে বই খুলতে হয়।
যা জানতাম তা যে ভুল সেটা জানাই ছিল।
জানি, কষ্ট করে ঠিক করাও অর্থহীন।
তাই বলে কি নতুন খেলা সাজাবো না ?
বাজে কঠিন কবিতা
আন্ধুলী বৃক্ষতলে শষ্পাসনে আসীন।
ভট্টারিকা সেবন করেন পিষ্টক রাতদিন।।
নয়নাভিরাম সূর্যোদয় দর্শনের তরে।
সামান্য পিষ্টক রস স্খলিত হয়ে পড়ে।।
কাঞ্চুকী যেই সিক্ত হলো স্খলিত হওয়া রসে।
পিপীলিকার উপনিবেশ কাঞ্চুকীতেই বসে।।
রাজকন্যা ভীতমনা বক্ষ কম্পমান।
ধোপানিকে অবতংস দিলেন করি দান।।
সেই যে তিনি রক্ষা পেলেন কুন্তলেক লাগি।
ঘৃণা ভরে ভট্টারিকা পিষ্টক দেন ত্যাগী।।
দার্জিলিং ১
মেঘের সাদায় হারিয়ে যাওয়া পাইন-জুনিপার
মূর্ছনাময় বৃষ্টি পড়ার কোমল গান্ধার
বৃষ্টিমাখা ভালোবাসায় আলগা মাটির রেশ
ভয়ঙ্করী সুন্দরতায় ভরিয়ে দিলো বেশ
পাহাড়-রানী তোমার প্রতি রইলো নমস্কার
দার্জিলিং ২
ওরেব্বাস রে রাস্তা তো নয় পাকাচ্ছে যেন সলতে,
বুকে হাঁপ ধরে কানে ঝাঁপ ধরে দুই চার ফুট চলতে।
ঠান্ডাতে দাঁতে ঠোকাঠুকি লেগে ছোটে আগুনের ফুলকি,
দেখো ঠিক করে কোন মাস এটা? জুন ভেবে হলো ভুল কি ?
এই বাহাদুর চা লেকে আউ, চা হোনা চায় ভালো,
দুধ চা বানালে চা কা পাত্তি থোড়া বেশি করে ডালো।
প্রচন্ড শীতে হাত পা জমেছে খুঁজে বের করো কম্বল,
ওরে তারাপদ জেলুসিল আন মেঘ খেয়ে হলো অম্বল।